কুরিয়ার ব্যাগ, পার্সেল ব্যাগ, সেল্ফ সিলিং ব্যাগ বা মেলইলার ব্যাগ আপনি যে নামেই চিনেন না কেন, ইকমার্স সেক্টরে এগুলো বহুল পরিচিত নাম। আসুন আজ বিস্তারিত জেনে নিই।

মেইলার ব্যাগ কি?
পলিমার বা লো ডেনসিটি প্লাস্টিক থেকে তৈরি হালকা ওজনের ও অত্যন্ত টেকশই প্লাস্কিক ব্যাগ। এই ধরণের ব্যাগ গুলোতে সেল্ফ সিলিং লিফ বা আঠা যুক্ত অতিরিক্ত অংশ থাকে। এই আঠা একেবারে লেগে লেগে গেলে তা পুণরায় খোলা অসম্ভব। আপনার প্রোডাক্ট টি সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করতে এবং ঠিকঠাক ভাবে কাস্টমার এর কাছে পৌছাতে মেইলার ব্যাগের বিকল্প নেই।

মেইলার ব্যাগ কত প্রকার?

সকল ধরণের মেইলার ব্যাগের কার্যকারিতা একই হলেও এর কিছু প্রকারভেদ আছে, যেগুলোতে অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া যায়।

১. রেগুলার মেইলার ব্যাগ: সাধাধারণ দুইপাশে সাদা রং এর হয় যেগুলোকে মিল্কি পলি বলে। বেশি পরিমানে প্রোডাকশন করলে যে কোনো রং এর বানানো যায়। ভিতরের প্রোডাক্টের রং বাইরে থেকে কিছুটা বুঝা যায়। এটিই সব থেকে বেশি ব্যবহৃত হয়। সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস এই ধরণের ব্যাগ ব্যবহার করে।

রেগুলার মেইলার ব্যাগ
রেগুলার মেইলার ব্যাগ

২. টেম্পার প্রুফ মেইলার বাগ: ভিতরে কালো বা সিলভার রং এর হয় উপরে যে কোনো রাং এর তৈরি করা যায়। ভিতরের পোডাক্টের রং বাইরে থেকে একদমই বোঝা যায়না। দামী প্রোডাক্ট এবং তাপে নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা আছে এমন প্রোডাক্টটের জন্য এই ধরণের ব্যাগ বেশি ব্যবহৃত হয়। DHL এই ধরণের ব্যাগ ব্যবহার করে।

টেম্পার প্রুফ মেইলার বাগ
টেম্পার প্রুফ মেইলার বাগ

৩. POD মেইলার বাগ: Proof of Delivery বা POD মেইলার ব্যাগের সাথে অতিরিক্ত স্বচ্ছ পলিথিনের ইনভয়েস পকেট থাকে। রেগুলা বা টেম্পার দুই ধরণেরই হতে পারে। দারাজ এই ধরণের ব্যাগ ব্যবহার করে।

POD মেইলার বাগ
POD মেইলার বাগ

৪. ভয়েড টেপ মেইলার ব্যাগ: এই ব্যাগ গুলোকে সিল করার জন্য এক ধরণের বিশেষ টেপ ইউস করা হয়। ব্যাগ নষ্ট না করেই টেপ খুলে ফেলা যায় তবে টেপ খুললে হলোগ্রামের স্কিকারের মত টেপের ডিজাইন বা রং ব্যাগে লেগে যায় এবং পরবর্তিতে আর ব্যাগ সিল করা যায না।

ভয়েড টেপ মেইলার ব্যাগ:
ভয়েড টেপ মেইলার ব্যাগ:

৫. থার্মালক্রোমিক টেপ মেইলার ব্যাগ: এই ব্যাগ গুলোকে সিল করার জন্য এমন এক ধরণের টেপ ব্যবহার করা হয় খুলে ফেলার পর রং পরিবর্তন হয়ে হয়ে যায়। এতে কাস্টমার বুঝতে পারে ব্যাগ সিল করার পর খোলা হয়েছিল কি না।

থার্মালক্রোমিক টেপ মেইলার ব্যাগ

৬. বাবল র‍্যাপ মেইলার ব্যাগ: এই ব্যাগ গুলোর ভিতর দিকে বাবল র‍্যাপ দেওয়া থাকে। কোনো ধরণের চাপ ও আঘাতে যে ন ভিতরের পন্য নষ্ট না হয়।।

বাবল র‍্যাপ মেইলার ব্যাগ

আমাদের দেশে সাধারণত রেগুলার, POD ও টেম্পার ব্যাগই বেশি ব্যবহৃত হয়।

কিভাবে কাস্টম ব্রান্ডিং মেইলার ব্যাগ তৈরিকরা হয়?

আপনি আপনার প্রতিষ্টানের নিজস্ব লোগো প্রিন্ট করে ব্রান্ডিং করে নিতে পারেন। সাধাধারণত দুইটি উপায়ে মেইলার ব্যাগে প্রিন্ট হযে থাকে হয়ে থাকে।

১. স্কিণ প্রিন্ট: স্ক্রিণ প্রিন্টিং এমন একটি প্রিন্টিং প্রযুক্তি যেখানে ম্যানুয়ালি ডাইসের উপর রং প্রয়োগ করে ছাপ বসানো হয়। স্ক্রিণ প্রিন্টিং এ একসাথে কেবল এক কালারই প্রিন্ট করা যায়। এ কারণেই ভিন্ন ভিন্ন কালার এর জন্য ভিন্ন ভিন্ন ডাইস ব্যবহার করতে হয়। এই প্রিন্টের খরচ তুলনামূলক বেশি এবং রং এর স্থায়িত্ব কম। সাধারণত কম পরিমান প্রিন্টের প্রয়োজনে স্কিনপ্রিন্ট করা হয়। ব্যাগ তৈরি করার পর ব্যাগের উপর একটি একটি করে হাতের সাহায্যে এই প্রিন্ট করা হয়।

স্কিণ প্রিন্ট

২. ফ্লেক্সোগ্রাফিক প্রিন্ট: এটিকে ফ্লেক্সো প্রিন্ট বা ব্লক প্রিন্ট বলা হয়। এই প্রযুক্তিকে ডিজাইনের রং অনুুযায়ি আলাদা আলাদা রাবারের ব্লক বা ফ্লেক্সো ব্লক বানানো হয়। যেগুলো দেখতে অনেকটা সিলের নিচের রাবারের মত। ব্লক গুলোকে অটোমেটিক মেশিনে বসিয়ে প্লাস্টিক ব্যাগের রোল প্রিন্ট করা হয়। প্রিন্ট শেষে সিলিং মেশিনের মাধ্যমে রোল কেটে তৈরি করা হয়। এই প্রযুক্তিকতে চার কালার পর্যন্ত প্রিন্ট করা যায়।

ফ্লেক্সোগ্রাফিক প্রিন্ট

এছাড়াও সিলিন্ডার প্রিন্টিং ও ডিজিটাল ফ্লেক্সো প্রযুক্তিতেও প্রিন্ট করা যায় তবে সেগুলো ব্যায়বহুল।

ইকমার্স বিজনেসে মেইলার ব্যগ কতটা জরুরি?

ইকমার্স বিজনেসেন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রোডাক্ট শিপমেন্টম। শিপমেন্টের জন্য এমন প্যাকেজিং নির্বাচন করা জরুরি যা আপনার প্যাকেজিং এর সময় ও ব্যয় কমাবে এবং পণ্যগুলি গ্রাহকের দোরগোড়ায় নিরাপদে পৌছাতে সাহায্য করবে। আপনার যদি প্যাকেজিং জন্য যদি অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যায় হয় এবং আপনার কাস্টমারের কাছে প্রোডাক্টট পৌছানোর আগেই যদি তা নষ্ট হয় বা প্যাকেট ছিড়ে প্রোডাক্ট হারিয়ে যায় বা রাস্তায় যদি প্যাকেট খুলে চুরি হয়ে যায় তাবে ইকমার্ম সেক্টরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা আপনার জন্য কষ্টকর হয়ে পড়বে। প্লাস্টিক মেইলার ব্যাগের মাধ্যমে আপনি এই সকল সমস্যার সমাধান পেতে পারেন

এই ধরণের প্লাস্টিকে ব্যাগ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর?
অবশ্যাই। এই ধরণের প্লাস্টিক ব্যাগ পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যা মাটিতে গেলে ক্ষয় হয়না বা মাটির সাথে মিশে যায়না। প্লাস্টিক এমন একটি পদার্থ যার আয়ুষ্কাল হাজার হাজার বছর। আমাদের অবশই মেইলার ব্যাগ ও এজাতীয় প্লাস্কিক দ্রব্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে যেন মাটিতে না মিশে রিসাইকেলিং এ চলে যায়।

মেইলার ব্যাগ কোথায় পাওয়া যায়?

জটিল প্রস্তুতপ্রক্রিয়া কারণে এর প্রস্তুতকারক ও সাপ্লাইয়ার সীমিত। ঢাকা চকরবাজার ও বেগমবাজার রোডের কিছু প্লাস্টিক পন্যের দেকন থেকে প্রিন্ট ছাড়া কিছু নির্দিষ্টি সাইজের খুচরা ও পায়কারি কিনতে পারবেন। আপনার নিজস্ব ডিজাইন ও সাইজে কাস্টমাইজ ব্যাগের জন্য প্রিন্টিং সেবা প্রদান করে এমন প্রতিষ্টানের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। বাংলাদের অন্যতম প্রিন্টিং সেবাদানকারী প্রতিষ্টান “ক্যানভাস – ডিজাইন এ্যন্ড প্রিন্টিং প্রেস” প্রায় সব ধরণের মেইলার ব্যাগ সাপ্লাই করে।

যোগাযোগের ঠিকানা-
Address: 105, Malek Market(1st Floor), Fokirapul, Motijheel, Dhaka-1000
Email: info@canvasdpa.com
Phone: 01821741350
Website: http://www.canvasdpa.com